বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে কয়েকটি সুপারিশ
- আপলোড সময় : ০৭-১০-২০২৪ ০৮:৫৯:৫০ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৭-১০-২০২৪ ০৮:৫৯:৫০ পূর্বাহ্ন

বৈষম্যহীন রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়তে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতে হবে। অর্থনৈতিক বৈষম্য কমানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তা খাত। কিন্তু আমাদের দেশে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল এবং যতটুকু বরাদ্দ হয় তার একটা বড় অংশ প্রকৃতপক্ষে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে না। সরকারি জরিপই বলছে তালিকাভুক্ত ভাতাভোগীদের ৪৬ শতাংশের বেশি ভাতা পাওয়ার যোগ্য নয়। ফলে প্রয়োজনের তুলনায় খুব কম সংখ্যক দরিদ্রই সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা পায়। ফলে যে কারণেই দেশের অর্থনীতির আকার যত বড় হচ্ছে বৈষম্য ততোই বেড়েই চলছে। সেখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের রাজনৈতিক, অর্থনীতি কাঠামোর পরিবর্তন ঘটাতে হবে। শ্রমজীবী মানুষের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে মানসম্মত কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে শ্রম আইনের আওতায় এনে শ্রমিকের বেঁচে থাকার মতো ন্যূনতম মজুরি ও নিরাপদ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কাছে ভাতা পৌঁছানোর নিশ্চয়তায় কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
জিডিপি অনুপাতে অপ্রতুল বরাদ্দ, অন্যদিকে ক্রমাগত বাণিজ্যিকীকরণের কারণে দেশে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের বৈষম্য বেড়েই চলছে। দেশে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বরাদ্দ যথাক্রমে জিডিপি’র এক ও দুই শতাংশ কম। অথচ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ অনুসারে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যখাতে জিডিপি’র চার থেকে পাঁচ শতাংশ এবং ইউনেস্কোর পরামর্শ অনুসারে জিডিপি’র চার থেকে ছয় শতাংশ শিক্ষাখাতে ব্যয় করা উচিত। এ বিষয়েও আমাদের সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। ২০২৩ সালের তথ্য অনুসারের প্রাথমিকে ভর্তির হার ৯৮ শতাংশ হলেও মাধ্যমিকে ঝরে পড়ে প্রায় ৩২.৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। উচ্চ মাধ্যমিক থেকে ঝরে পড়ে আরও ২১.৫১ শতাংশ। উচ্চশিক্ষার সুযোগ পায় মাত্র ২০.২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। এটা অবশ্য আমাদের জন্য সুখকর নয়।
স্বাস্থ্যখাতে চিকিৎসক, নার্সসহ প্রশিক্ষিত জনবলের ব্যাপক সংকট রয়েছে। বিশ^স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে। দেশে প্রতি ১০ হাজার মানুষের জন্য চিকিৎসক-নার্স-ধাত্রী সংখ্যা মাত্র ৯.৯, যা বৈশিক গড়ের তুলনায় অনেক কম (৪৮.৬)।
বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে চিকিৎসা, শিক্ষাখাতে, সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি করতে হবে। সবক্ষেত্র থেকে দুর্নীতি দূর করতে হবে। শিক্ষা চিকিৎসা সুবিধা প্রাপ্তিতে গ্রাম শহরের ভেদাভেদ দূর করতে হবে।
বর্তমানে দেশে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করতে হবে। বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার কারনে মানুষ ক্ষুব্ধ। আমরা চাই সকল ক্ষেত্রে কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে। তা না হলে কোনো সংস্কারই টেকসই হবে না।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ